রজব মাসের আমল ও ফজিলত এবং দোয়া

 আপনি কি রজব মাসের ফজিলত সম্পর্কে জানতে ইচ্ছুক? তাহলে আজকে এই রজব মাসের ফজিলত ও আমল সম্পর্কিত এই পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। আরবি মাসের সপ্তম মাস রজব মাস। এই রজন মাসের ফজিলত ও আমল অনেক তাই রজব মাস সম্পর্কে আমাদের জানা দরকার। রজব  মাসে আমাদের মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করেন। চারটি পবিত্র মাসের মধ্যে রজব মাস একটি  মাসের রোজা রাখা উত্তম। তাহলে রজব মাসের ফজিলত আমল সম্পর্কে নিম্নে আলোচনা করা হলোঃ


  •  রজব মাসের আমল ও ফজিলত
  • রজব মাসে রোজা
  • রজব মাসের সাধারণ আমল
  • রজব মাসের দোয়া

  আমরা সবাই জানি যে,বাংলাতে ইংরেজিতে যেমন বারোটি মাস আছে তেমনি ভাবে আরবিতে বারোটি মাস আছে। সপ্তম মাস হিসেবে রজব মাসকে চিহ্নিত করা হয়। এই রজব মাসের ফজিলত ও আমল অনেক। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এই মাসে মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করেন এবং এই রজব মাসের ২৭ তারিখ রাতে মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহর নির্দেশে সাত আসমান ঘুরে এসেছেন । এই ২৭ শে রজব পবিত্র মিরাজ হিসেবে পালন করা হয়।



 


রজব মাসের ফজিলত ও আমল

রজব মাস ক্যালেন্ডার চারটি পবিত্র মাসের একটি আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু সাল্লাম বলেছেন রজব মাস আল্লাহর মাস। সাবান আমার মাস রমজান আমার উম্মতের মাস। 

পবিত্র রজব মাসটিি প্রত্যেকটি বিশ্বাসের আধ্যাত্মিক সূচনা করে যা রমজান মাসে রোজা ও ঈদুল ফিতরের মাধ্যমে শেষ হয় পবিত্র মাসগুলো তাদের বিরুদ্ধে অতুলনীয় আমাদের উচিত সর্বশক্তিমান আল্লাহর প্রশংসা করা এবং পবিত্র রজব মাসে আমাদের পাপ ও ভুলগুলি থেকে নিজেকে পাপ মুক্ত করার সুযোগ দেওয়ার জন্য আল্লাহর কাছে আমরা কৃতজ্ঞ।

আরো পড়ুন: জরুরি সেবা নম্বর সমূহ - কিভাবে কল দিবেন - কিভাবে সহায়তা নিবেন

পবিত্র হাদিসে বর্ণিত আছে যে, মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু সাল্লাম বলেছেন রজব হল আল্লাহর মাস যাকে পাল আসাম বলা হয় কারণ এতে আল্লাহ তার বান্দা দের উপর রহমত বর্ষণ করেন। এবং পবিত্র রজব মাসের দিনগুলি মানুষের জন্য আল্লাহ সুবহানাতায়ালা কাছে ফিরে আসার এবং তার করুনা অনুভব করা অতীতের যে কোন ঘৃণায় হিংসা পরিত্যক্ত করার সুযোগ।

রজব মাসের রোজা

রজব মাসসহ পবিত্র মাস গুলোতে স্বেচ্ছায় রোজা রাখা উচিত এ প্রসঙ্গে আবু দাউদ বর্ণনা করেছেন তোমরা পবিত্র মাসে কিছু দিন রোজা রাখো এবং অন্যদিন রোজা ত্যাগ কর। রজব মাসে বেশি বেশি নেকি পাওয়ার জন্য দ্বিগুণ পরিমাণে নেক আমল করা উচিত পবিত্র মাস গুলি ভালো কাজের প্রতিদান বহু গুনে বেড়ে যায় তাই যত সম্ভব ভালো কাজ করা উচিত। আল্লাহর রাসূল মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম পবিত্র দিনগুলির জন্য পরামর্শ দিতেন হল প্রতি সোমবার বৃহস্পতিবার শুক্রবার রোজা রাখা ভালো।

আরো পড়ুন: জীবন দক্ষতা ভিত্তিক শিক্ষার গুরুত্ব - জীবন দক্ষতা ভিত্তিক শিক্ষার কৌশল

 ইসলামের ইতিহাসের সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা এই পবিত্র মাস রজন মাসের ২৭ তারিখ শবে মিরাজ সংগঠিত হয়। এ রাতে হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম মাত্র এক সেকেন্ডে মধ্যে সপ্তম আসমানে পরিদর্শন করেন। ইসলাম আগমনের পর বছরের বারো মাসের মধ্যে থেকে রজবসহ চার মাসকে আসরে হুররুম সম্মানিত মাস ঘোষণা করা হয় এ সম্পর্কে আল কুরআনের এরশাদ করেছেন নিশ্চয়ই আকাশ মন্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টির দিন থেকেই আল্লাহর কাছে গণনা মাস 12 টি তার মধ্যে চারটি সম্মানিত ও মর্যাদা পূর্ণ মাস সেগুলো হলো জিলকদ জিলহজ্ব মহরম ও রজব।

রজব মাসের সাধারণ আমল

রজবের প্রথম রাতে দোয়া কবুল হয় পবিত্র হাদীস শরীফে রজবের প্রথম রাতে দেয়াল কবুল হওয়ার সুসংবাদ এসেছে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রাঃ বর্ণিত তিনি বলেন পাঁচটি রাত আছে এমন যেগুলোতে বান্দার দোয়া আল্লাহ তায়ালা ফিরিয়ে দেন না অর্থাৎ অবশ্যই কবুল করেন রাতগুলো হলো জুম্মার রাত রজবের প্রথম রাত সাবানের ১৫ তারিখ ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার রাত। প্রথম মাসে রোজা রাখার ভিন্ন কোন ফজিলত নেই তবে হ্যাঁ এমনিতেই নফল রোজা রাখা অনেক ফজিলতপূর্ণ আমল। প্রখ্যাত মুহাদ্দিস ইবনে হাজার রহমাতুল্লাহ আলাইহি সাল্লাম লিখেছেন বিশেষ ভাবে রজব মাসে রোজার ফজিলত সম্পর্কে সহি ও আমলযোগ্য কোন হাদিস নেই তবে আমাদের সমাজে প্রচলিত আছে ২৭ শে রজব রোজা রাখলে অনেক ফজিলত এমনকি অনেকের মধ্যে বিশ্বাস রয়েছে যে এই রোজার ফজিলত রোজার সমান এজন্য তাকে  হাজাররি রোজা বলে অভিহিত করা হয় যা অগ্রহণযোগ্য কোনো বর্ণনা নেই।

হযরত আয়েশা রাজিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু বলেন আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম কে রজব ও শাবান মাসে এত বেশি রোজা রাখতে দেখেছি রমজান ছাড়া অন্য কোন মাসে এত রোজা রাখতে দেখিনি। স্রষ্টার পরে মাখলুকের মধ্যে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর প্রথম রোজা করতেন। তাই আমরাও যদি রজব মাস থেকে পবিত্র মাহে রমজানের প্রস্তুতি নিয়ে থাকি। আর আল্লাহর কাছে দোয়া করতে শুরু করি হে আল্লাহ আমাকে সুস্থ রাখো আমি যেন আগত রমজানের পূর্বের তুলনায় আরো অনেক বেশি ইবাদত বন্দেগি করতে পারি এবং রাতে কোরআন পাঠ করতে পারি।

রমজান মাসের দোয়া

আনাস বিন মালেক রহমাতুল্লাহ আলাইহি বলেন, রজব মাস এলে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু সাল্লাম বলতেন আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফি রাজাবা ওয়া সাবান, ওয়া বাল্লিগনা রামাদান। অর্থঃ হে আল্লাহ রজব ও সাবান মাসে আমাদের বরকত দান করুন, আর রমজান মাস পর্যন্ত আমাদের জীবিত রাখুন।

আরো পড়ুন: নীলিমা নামের অর্থ কি - নীলিমা নামের মেয়েরা কেমন হয়

এছাড়া হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম শাবান মাসে ও অনেক বেশি ইবাদত করতেন আর তিনি রমজান মাস ছাড়া প্রতিমাসে নফল রোজা রাখতেন বিশেষ করে রজব মাসে।

আমরাও যদি মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর সুন্নত অনুযায়ী প্রতিমাসে কয়েকটি করে রোজা রাখি তাহলে রমজানের রোজা আমাদের জন্য আরও সহজ হয়ে যাবে এছাড়া আমরা যদি মনের  ঝেড়ে ফেলে রজব মাস থেকেই রমজানের পুরো প্রস্তুতি গ্রহণ করি তাহলে আমাদের সব ইবাদত বন্দেগী হবে প্রশান্তিময়। তাই আমাদের উচিত রজব মাস থেকে এই রমজানের প্রস্তুতি গ্রহণ করা।


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url