OrdinaryITPostAd

বাংলা বিরাম চিহ্ন গুলো কি কি ও এর ব্যবহারের নিয়ম আলোচনা করা হলো।

বাক্যের বিভিন্ন ভাব সার্থক প্রকাশের জন্য কণ্ঠস্বর এর ভঙ্গি ও তারতম্য বোঝাতে বর্ণের অতিরিক্ত যে সব চিহ্ন ব্যবহারিত হয় সেগুলোকে বলে বিরাম চিহ্ন। বিরাম চিহ্নের অর্থ যে চিহ্নের সাহায্যে কথা বলার সময় জিভের কাজের বিরতি নির্দেশিত হয়। বাক্যের পথগুলোকে নির্দিষ্ট রীতি অনুযায়ী সাজিয়ে তোলায় বিরাম চিহ্নের কাজ। উল্লেখ্য বাংলা সাহিত্যের ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর প্রথম বিরাম চিহ্ন ব্যবহার করেন।



ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ২৬ শে সেপ্টেম্বর ১৮২০ সালে খ্রিস্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন পশ্চিমবঙ্গের হুগলি আর বর্তমানে মেদিনীপুর জেলার বীর সিংহ গ্রামে তার পৈতৃক পদবী বন্দ্যোপাধ্যায় পারিবারিক নাম ঈশ্বরচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় তিনি স্বাক্ষর করতেন ঈশ্বরচন্দ্র শর্মা নামে উপাধি বিদ্যাসাগর তার পিতার নাম ঠাকুরদা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মাতা নাম ভগবতী দেবী।   ২৯ শে জুলাই  ১৮৯১ খ্রিষ্টাব্দে মৃত্যুবরণ করেন।

সূচিপত্র

  • বিরাম চিহ্ন গুলো কি কি?
  • বিরাম চিহ্ন গুলোর পরিচয় এবং বিরতির সময়
  • বিরাম চিহ্ন ব্যবহারের নিয়ম
  • শেষ কথা

 বিরাম চিহ্ন গুলো কি কি

আমরা অনেকে জানি বিরাম চিহ্নের ব্যবহার ।  বিরাম চিহ্ন কোনগুলো এবং বিরাম  চিহ্নের ব্যবহার সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবো। বিরাম চিহ্ন গুলো হল: সেমিকোলন, দাড়ি, প্রশ্ন, চিহ্ন, বিস্ময় চিহ্ন, কোলন, কোলন-ড্যাস, হাইফেন, উদ্ধৃতি চিহ্ন, লোপ চিহ্ন, বন্ধনী চিহ্ন, বর্জন চিহ্ন, বিন্দু ইত্যাদি্। 

আরো পড়ুন:অতিরিক্ত  চুল পড়ার কারণ কি ও এর সমাধান কি

বিরাম চিহ্ন গুলোর পরিচয় এবং বিরতির সময়:

বিরাম চিহ্ন ও বিরাম চিহ্ন গুলোর বাংলা অর্থ এবং এগুলো সম্পর্কে আমরা বিস্তারিত জানবো। বিরাম চিহ্ন গুলো কোথায় কতটুকু থামতে হয়। সে সম্পর্কে  বিস্তারিত জানার জন্য আমাদের পুরো আর্টিকেল জুড়ে থাকুন।

  1. কমা র বাংলা অর্থ পাুদচ্ছেদ ।  যেখানে কমা থাকে সেখানে এক বলতে যে সময় লাগে ততটুকু থামতে হয়।
  2.  সেমিকোলন বাংলা অর্থ অর্ধচ্ছেদ। যেখানে সেমিকোলন থাকবে, সেখানে এক বলার দ্বিগুণ সময় থামতে হয়।
  3. দাড়ি এর অর্থ  পূর্ণচ্ছেদ। যেখানে দাঁড়িয়ে থাকে, সেখানে এক সেকেন্ড থামতে হয়।
  4. প্রশ্নচিহ্ন এর অর্থ প্রশ্নবোধক। যেখানে প্রশ্নবোধক চিহ্ন থাকে, সেখানে এক সেকেন্ড থামতে হয়।
  5. বিষ্ময় চিহ্ন এর বাংলা অর্থ বিস্ময় সূচক চিহ্ন। যেখানে বিস্ময় সূচক চিহ্ন থাকে, সেখানে এক সেকেন্ড থামতে হয়।
  6. কোলন এর অর্থ ছেদ। যেখানে কোলন চিহ্ন থাকে সেখানে এক সেকেন্ড থামতে হয়।
  7. কোলন _ড্যাস এর অর্থ  ছেদ বাক্য সঙ্গতি চিহ্ন। যেখানে কোলন ড্যাস থাকে ,সেখানে  ১ সেকেন্ড থামতে হয়।
  8. হাইফেন এর অর্থ শব্দ সংযোগ চিহ্ন। যেখানে হাইসেন থাকে সেখানে খামার প্রয়োজন হয় না।
  9. উদ্ধৃতি এর অর্থ উদ্ধৃতি চিহ্ন। যেখানে উদ্ধৃতি চিহ্ন থাকে সেখানে এক সেকেন্ড থামতে হয়।
  10. লোপ চিহ্ন এর অর্থ ইলেক চিহ্ন। যেখানে লোপ চিহ্ন থাকে সেখানে , থামার কোন প্রয়োজন নেই।
  11.  বন্ধনী চিহ্ন এর বাংলা অর্থ বন্ধনী চিহ্ন। যেখানে বন্ধনী চিহ্ন থাকে সেখানে খামার কোন প্রয়োজন নেই।
  12. বর্জন চিহ্ন এর অর্থ বর্জন চিহ্ন। যেখানে বর্জন চিহ্ন থাকে সেখানেও কোন থামার প্রয়োজন নেই।
  13. বিন্দু চিহ্ন এর বাংলা অর্থ বিন্দু। যেখানে বিন্দু থাকে সেখানেও থামার কোন প্রয়োজন নেই।

আরো  পড়ুন: পানের উপকারিতা ও অপকারিতা - কাচা পানের উপকারিতা

বিরাম চিহ্ন ব্যবহারের নিয়ম: 

নিচে বিরাম চিহ্ন ব্যবহারের নিয়মগুলি আলোচনা করা হলো

১. কমা (,) 

  • বাক্যের একই পদের একাধিক শব্দ পাশাপাশি ব্যবহার হলে কমা ব্যবহার করতে হয়।     যেমন: সালাম, বরকত, শফিক, জব্বার, এরা বাংলা ভাষার জন্য শহীদ হয়েছেন।
  • এক জাতীয় একাধিক বাক্য পাশাপাশি ব্যবহৃত হলে কমা বসে। যেমন: সে ক্লাসে ঢুকল, বই নিল, তারপর বেরিয়ে গেল।
  • সম্মেলনের পর কমা বসে। যেমন: ছাত্ররা, মনোযোগ দিয়ে শোনো।
  • ঠিকানা লিখতে। যেমন: মৌ, ১৩/১, রাজাবাজার, ঢাকা, ১২১৫।

২. সেমিকোলন(;)
  • দুটি বা তিনটি বাক্য সংযোজক  অব্যয়ের সাহায্যে যুক্ত না হলে সেমিকোলন ব্যবহার হয়। যেমন: আগে পাঠ্য বই পড়া: পরে গল্প উপন্যাস।
  • সেজন্য, তবু,, তথাপি তারপর, ইত্যাদি এসব অব্যয় অনুমান প্রকাশ করে তাদের আগে সেমিকোলন বসে। যেমন: সে ফেল করেছে; সেজন্য সে মুখ দেখায় না।
  • যেসব বাক্যে ভাব সাদৃশ্য আছে তাদের মধ্যে সেমিকোলন বসে। যেমন: দিনটা ভালো নয়; মাঝে মাঝে বৃষ্টি পড়ছে।  

৩. দাঁড়ি(।)
  • বাক্য সম্পূর্ণরূপে শেষ হয়ে গেলে দাড়ি বসে। যেমন: গগনে গরজে মেঘ ঘন বরষা।
৪. প্রশ্নবোধক চিহ্ন(?)
  • সোজাসুজি প্রশ্ন জিজ্ঞেস করলে প্রশ্নবোধক চিহ্ন বসে। যেমন: তোমার নাম কি?
  • কণ্ঠস্বরের প্রশ্নবোধক ভাব থাকলে প্রশ্নবোধক চিহ্ন বসে। যেমন: হাস্য? হাস্য শুধু আমার সখা?
৫. বিস্ময় চিহ্ন(!)
  • যে পদে বা বাক্যে বিস্ময়, ভয়, বিষাদ, ঘৃণা, আবেগ ইত্যাদি ভাব প্রকাশ পায় সেসব পদ এর শেষে বিস্ময় চিহ্ন বসে। যেমন: আহা! কি সুন্দর ফুল! মরি মরি! কি অপরূপ! কি ভয়ংকর সে রাতের ঝড়!
৬. উদ্ধৃতি চিহ্ন('''')
  • অন্যের লেখা অবিকল উক্তির ক্ষেত্রে। " যাহা চায় তাহা ভুল করে চাই যাহা পাই তাহা চাই না"
৭. কোলন(:)
  • বাক্যের কোন ও প্রসঙ্গ অবতারণার আগে কোলন বসে। যেমন: শপথ নিলাম: পাশ করবই।
  • কোন বিবৃতিকে সম্পূর্ণ করতে দৃষ্টান্তের ক্ষেত্রে কোলন বসে। যেমন: পদ পাঁচ প্রকার: বিশেষ্য, বিশেষণ,, সর্বনাম অব্যয় ও ক্রিয়া।
৮. ড্যাস(-)
  • বাক্যের গঠনে আকস্মিক পরিবর্তন চিহ্নিত করার জন্য। যেমন: সে বললো-হাই! আমার কি হলো। 
  • দ্বিধা প্রকাশে। যেমন: আমি-পরীক্ষায় ভালো করিনি। 
৯. কোলন ড্যাস(:-)
  • উদাহরণ প্রয়োগ করতে হলে কোলন এবং ড্যাস চিহ্ন একসঙ্গে ব্যবহৃত হয়। যেমন: পদ পাঁচ প্রকার। যথা-বিশেষ্য. বিশেষণ. সর্বনাম. অব্যয় এবং ক্রিয়া।
১০. হাইফেন বা সংযোগ চিহ্ন(-)
  • দুটো শব্দের সংযোগ বুঝালে হাইফেন চিহ্ন ব্যবহৃত হয়। যেমন: তেল-নুন-লকড়ি,সাহেব-বিবি-গোলাম।
১১. বন্ধনী চিহ্ন(){}[]
  • এই তিনটি চিহ্ন গণিত শাস্ত্রে ব্যবহৃত হয় তবে প্রথম বন্ধনী টি বিশেষ ব্যাখ্যামূলক অর্থে সাহিত্যে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। যেমন: রবীন্দ্রনাথ কলকাতায় (জোড়াসাঁকো)গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।

শেষ কথা

এরই মধ্যে আমরা বিরাম চিহ্নর অর্থ এবং বিরাম চিহ্ন ব্যবহার সম্পর্কে বিস্তারিত জেনেছি। লেখায় বা মুদ্রণে বক্তব্যকে যথাযথভাবে প্রকাশ এবং তা অর্থকে সুস্পষ্ট ভাবে উপস্থাপনার জন্য আমরা যে চিহ্ন ব্যবহার করি সে চিহ্নগুলোকে জ্যোতি বা বিরাম চিহ্ন হিসেবে জেনেছি ।বাংলা জ্যোতি বা বিরাম চিহ্নের প্রবর্তক ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর । বাংলা সাহিত্যে প্রাচীন ও মধ্যযুগের বিরাম চিহ্ন ছিল মাত্র দুইটি এক নারী এবং দুই দাঁড়ি। বিদ্যাসাগর মোট যতটি বিরাম চিহ্ন ব্যবহার করেছে। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর বাংলা ও ইংরেজ সমন্বয় বিরাম চিহ্নের ব্যবহার করে।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩