দক্ষতা অর্জনের গুরুত্ব - দক্ষতা অর্জনের উপায়

প্রিয় পাঠক আজকে আমরা জানবো জীবনে দক্ষতা অর্জনের গুরুত্ব কতটা। তার জন্য আমাদের দক্ষতা অর্জনের উপায় গুলো জানতে হবে এবং দক্ষতা অর্জনের গুরুত্ব কতটা সেটা বুঝতে হবে। চলুন তাহলে কথা না বাড়িয়ে জানা যাক দক্ষতা অর্জনের গুরুত্ব এবং দক্ষতা অর্জনের উপায় গুলো কি কি।

পোস্ট সূচিপত্রঃ দক্ষতা অর্জনের গুরুত্ব- দক্ষতা অর্জনের উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন।

দক্ষতা অর্জনের গুরুত্ব

একজন মানুষের জন্য দক্ষতা অর্জনের গুরুত্ব এই বিষয় টা যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা কেবল সময়ই বলে দেয়। আমরা যদি কোনো কাজ করতে যাই, কিন্তু সেই কাজ সম্পর্কে আমাদের কোনো ধারণা না থাকে কিংবা আমরা যদি সেই কাজে দক্ষ না থাকি তবে আমরা সেই কাজটি কোনো ভাবেই করতে পারবো না। এর জন্য সকল বিষয়ের প্রতি আমাদের দক্ষতা অর্জনের উপায় জানতে হবে এবং সেই মোতাবেক কাজ করতে হবে।
এই সমাজে দক্ষ মানুষের গুরুত্ব অনেক বেশি। তাই এই সমাজে নিজেকে প্রমাণ করতে হলে সর্বো প্রথম দক্ষতা অর্জনের উপায় জানতে হবে, দক্ষতা অর্জনের গুরুত্ব বুঝতে হবে। আজকের  এই পোস্টে দক্ষতা অর্জনের গুরুত্ব কি কি এবং দক্ষতা অর্জনের উপায় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো। যাতে আপনারা প্রত্যেকে দক্ষতা অর্জনের উপায় গুলো জানতে পারেন।

দক্ষতা অর্জনের উপায়

দক্ষতা অর্জনের উপায় হিসেবে আপনি ফ্রিল্যান্সিং শিখতে পারেন। এছাড়াও আরো অনেক উপায় আছে যেগুলো আপনার দক্ষতা বাড়াতে পারবে। দক্ষতা অর্জনের গুরুত্ব বুঝতে হলে আপনি শরীরচর্চা করতে পারেন। এছাড়া দক্ষতা অর্জনের জন্য আপনি একজন আদর্শ শ্রোতা হন। শ্রোতার কথা খুব মনোযগ দিয়ে শুনুন। একজন শ্রোতা হওয়াটাও একটা দক্ষতা যা সবার ভিতরে পাওয়া যায় না।

নিজের ইচ্ছে শক্তি বাড়িয়ে তুলুন। আমাদের মধ্যে সব সময় অসীম ইচ্ছে শক্তি বিরাজ করে। এটা প্রাণ শক্তির মতো। এটা ধরে রাখার এক মাত্র উপায় হলো কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় সীমাবদ্ধতা রাখা। দক্ষতা অর্জনের গুরুত্ব শুধু এইটুকুতেই শেষ নয়। এই পোস্টের শেষে দক্ষতা অর্জনের গুরুত্ব এবং ৪০টি উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো। তাই শেষ পর্যন্ত এই পোস্টটি পড়ে দক্ষতা অর্জনের উপায় গুলো জেনে নিন।

দক্ষতা বৃদ্ধির উপায়

দক্ষতা অর্জনের গুরুত্ব কতটা তা সবার জানা উচিত। তাই সকলের দক্ষতা অর্জন করা উচিৎ। আপনার যদি কোনো বিষয়ের প্রতি কৌতূহল হয় তাহলে সেটি শিখতে চেষ্টা করুন। যা কিছু আমাদের ভালো লাগে কিছু ভালোবাসা কাজ করে সেগুলোই আমরা দ্রুত শিখতে পারি। আর যেসব বিষয় আমাদের বেশি টানে না সেসব বিষয় আমরা করতেও পারি না।
দক্ষতা অর্জন আমাদের অনেক পরিশ্রম এবং সময় ব্যয় করতে হয় নাহলে দক্ষতা অর্জনের গুরুত্ব বুঝা যায় না। অনেক পরিশ্রমের পরে সফল হওয়া সম্ভব তাই দক্ষতা অর্জন করতে থাকুন। দক্ষতা অর্জনের প্রকল্প যদি আপনি এক দিনেই নেন, তাহলে উল্লেখ ফলাফল পেতে দীর্ঘ সময় লেগে যাবে। আর এ থেকে তৈরি হতে পারে হতাশা। তাই দক্ষতা অর্জনের জন্য আপনাকে কঠোর পরিশ্রম এবং ধৈর্য্য ধরতে হবে।

পেশাগত দক্ষতা অর্জনের উপায়

পেশাগত দক্ষতা অর্জনের গুরুত্ব কতটা সেটা আমি এখানেই উল্লেখ করে দিচ্ছি। পেশাগত দক্ষতা অর্জনের উপায় গুলো যদি রপ্ত করতে চান তাবে প্রথমেই আপানকে মানসিক ভাবে পেশাদার হিসেবে সেরা মনোভাব অর্জনের কথা ভাবতে হবে। অনেকেই ভাবেন সেরা পেশাদার জন্ম থেকে কিছু বিশেষ পেশাগত দক্ষতা নিয়ে পৃথিবীতে আসেন। 

কিন্তু এরকম কিছু নয়। আপনার যে বিষয়টি বা কাজটি করতে ভালো লাগে বা আপনার কোনো কাজ করার ইচ্ছে থাকলে আপনার সেই বিষয়ে মন স্থির করতে হবে এবং সেই বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করতে হবে। দক্ষতা অর্জন ছাড়া অন্য কোনো বিকল্প নেই পেশাদার দিক থেকে। তাই প্রথমেই আপনাকে দক্ষতা অর্জন করতে হবে।

জীবনে দক্ষতা অর্জনের উপায়

দক্ষতা অর্জনের গুরুত্ব আমরা ইতোমধ্যে বুঝে গেছি তাই এবার দক্ষতা অর্জনের উপায় সম্পর্কে কিছু বিস্তারিত আলোচনা করা হলো-

১. কোনো বিষয়ে আপনার কৌতূহলঃ আপনার যে বিষয়টি ভালো লাগে কিংবা ভালোবাসার কাজ সেই বিষয়টিতে আপনি খুব সহজেই দক্ষতা অর্জন করতে পারেন।

২. মনোভাব স্থির রাখাঃ আপনি কোনো বিষয় করতে চাচ্ছেন তাহলে সেই কাজটি করার জন্যই মনকে স্থির রাখুন এবং ওই বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করুন।
৩. পরিশ্রম ও ধৈর্য্য ধারণঃ কোনো কিছু করতে চাইলে বা জীবনে সফল হতে চাইলে আপনাকে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে এবং ধৈর্য ধরতে হবে৷ কঠোর পরিশ্রম এবং ধৈর্য্য ধারণ ছাড়া অন্য কোনো বিকল্প নাই।

৪. কতটুকু শিখতে চানঃ প্রতিদিন আপনি কতটুকু শিখতে পারেন কিংবা দক্ষতা অর্জন করতে পারবেন সেই অনুযায়ী শিখুন। দক্ষতা অর্জনের জন্য আপনাকে প্রতিদিন নতুন কিছু অর্জন করতে হবে।

৫. ভাগ করে ফেলুনঃ পুরো দক্ষতা অর্জনের প্রক্রিয়া টুকু ভাগ করে ফেলুন এবং সেই অনুযায়ী দক্ষতা অর্জন করুন।

৬. প্রয়োজনীয় উপকরণ সংগ্রহঃ প্রয়োজনীয় উপকরণ সাথে নিয়ে যে বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করতে চান সেই বিষয় টা শিখুন।

৭. দূর থেকে অনুশীলনের বাধাঃ অনুশীলনীর সময় কোনো প্রযুক্তির বাধা বা কোনো কিছু বাধা হয়ে না দাড়ায় সেদিকে নজর দেওয়া প্রয়োজন।

৮. সময় আলাদা করুনঃ নির্দিষ্ট একটি সময় আলাদা করার অভ্যাস করুন অনুশীলনের জন্য।

৯. আয়না দেখাঃ ভালো প্রতিফলন দেখতে না পেলে আমরা সেই কাজটি আবার শিখতে চাই। তাই কোনো কিছু না পারলে সেটি আবার চেষ্টা করুন।

১০. ঘড়ি ধরে অল্প করেঃ কোনো কিছু প্রথম প্রথম শিখতে গেলে আমরা অসুবিধায় পরে যাই, যার জন্য আমাদের ঘড়ি ধরে অল্প অল্প করে শিখার অভ্যাস করতে হবে।

১১. পরিমাণ ও গতিতে জোর দিনঃ হতাশা কাটিয়ে অনুশীলনে মনোযোগ দেওয়াটা অধিক গুরুত্বপূর্ণ।

১২. আদর্শ শ্রোতা হনঃ বক্তার কথা মনোযোগ সহকারে শোনা যতটা জরুরি, তেমনি জরুরি মনেহয় আপনি তার কথার প্রসঙ্গ ধরে নিজে কিছু বলার সুযোগ চান।

১৩. ইচ্ছাশক্তি ধরে রাখাঃ কোনো কিছুর দক্ষতা অর্জনের জন্য ইচ্ছেশক্তি থাকা আবশ্যক।

১৪. সব সময় নিজের ওপর বিশ্বাস রাখাঃ দক্ষতা অর্জনের জন্য সব সময় নিজের ওপর বিশ্বাস রাখা অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

১৫. নিজের প্রতি খেয়াল রাখাঃ নিজের প্রতি যত্নশীল হওয়া, নিজেকে সময় দেওয়া এটিও দক্ষতা অর্জনের একটি ধাপ।

১৬. নিজের লক্ষ্যে মনোযোগ দেওয়াঃ আপনি যে বিষয় টা শিখতে চাচ্ছেন সেটা সব সময় আপনার মাথায় রাখতে হবে এবং সে অনুযায়ী কাজ করা। 

১৭. ঠিক ভূলের পার্থক্য বুঝাঃ আপনাকে সব সময় সঠিক এবং ভূল সিন্ধান্তের পার্থক্য বুঝতে হবে। কোনটা করলে ভালো হবে সেটা করতে হবে।

১৮. অন্যের মতামত শোনাঃ কোনো বিষয় নিয়ে আপনার ভিতরে দন্ধ হলে আপনি সেই বিষয়টি অন্য কারোর কাছ থেকে মতামত নিতে পারেন।

১৯. ঘুম নিয়ন্ত্রণঃ সুস্বাস্থ্য ধরে রাখার জন্য ঘুমের বিকল্প নেই। 

২০. টাইম ম্যানেজমেন্টঃ খুবই গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতা এই টাইম ম্যানেজমেন্ট বা সময় ব্যবস্থাপনা। টাইম ম্যানেজমেন্ট হলো সময়ের কাজ সময়ে করে নেওয়া।

২১. না বলতে পারা একটি দক্ষতাঃ সকল কাজে নিজেকে জড়ানো বুদ্ধিমানের কাজ নয়। তাই যে কাজটি আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ নয় সেই কাজ কে না বলে দিন।

২২. নিজেকে মূল্যায়ন করাঃ আপনি যদি নিজেকে মূল্যায়ন করতে না পারেন তাহলে কোনো কাজই সফল হবে না, তাই নিজেকে সবার প্রথমে মূল্যায়ন করুন।

২৩. এক জনার কথা অন্য জনকে না বলাঃ কোনো বিষয় আপনাকে কেউ বললো কিন্তু সেই কথাটি যদি আপনি অন্য কারো কাছে বলে দেন তাহলে মানুষ আপনার ওপর বিশ্বাস হারিয়ে ফেলবে। তাই কারো কথা কারো কাছে বলা উচিৎ নয়।

২৪. অন্যের কথা শোনাঃ অন্যের কথা মনোযোগ দিয়ে শোনা এটি একটি দক্ষতা।

২৫. ইতিবাচক মানুষের সাথে চলাঃ আপনি যখন দেখবেন আপনি ইতিবাচক মানুষের সাথে চলাচল করবেন তখন আপনার ভিতরেও ইতিবাচকতা ভর করবে।

২৬. সব কাজ একা না করাঃ এমন অনেক কাজই আছে যেগুলো একা করা সম্ভব নয় তাই একা কাজ করবেন না।

২৭. বর্তমানে বাস করাঃ সব সময় বর্তমানের চিন্তা করতে হবে। কখনো আগ্রিম ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা করা উচিৎ নয়।

২৮. জনসম্মুখে কথা বলাঃ একজন সফল মানুষের অন্যতম গুণ হলো জনসম্মুখে কথা বলা।

২৯. সততার চর্চা করুনঃ সততা চর্চা মানুষকে অন্য মানুষের কাছে বিশ্বাস যোগ্য করে তুলে।

৩০. বেশি পড়ুনঃ যারা বই পড়তে ভালোবাসে তাদের শত্রুর সংখ্যা কম। বেশি বই পরলে জ্ঞান বৃদ্ধি পায়। তাই বেশি করে বই পড়ুন।

৩১. নতুন ভাষা শিখুনঃ সব সময় শুদ্ধ বলার চেষ্টা করুন। শুদ্ধ বলা একটি দক্ষতা।

৩২. সৃষ্টিশীল চিন্তা করাঃ সব সময় ভালো কিছু করার চিন্তা করুন। আপনাকে নিয়ে যাতে মানুষ ভালো কিছু আশা করতে পারে।

৩৩. পাবলিক স্পিকিংঃ অনেকেই বলে মানুষের সাথে কথা বলতে গেলে সব সময় মাথা ঠান্ডা রাখতে হয়। তাই পাবলিক স্পিকিং করা জরুরি।

৩৪. মধ্যস্থতা করুনঃ মধ্যস্থতার সময় আপনি যা দিচ্ছেন তার প্রতি জোর দিয়ে কথা বললে অপর পক্ষ আগ্রহী হবে।

৩৫. মানুষিক চাপ কমানঃ কাজ ও মনের চাপের কারণে উৎপাদনশীলতা ও মনোযোগ নষ্ট করেবেন না।

৩৬. বন্ধুত্ব গড়ে তুলুনঃ বড় হয়ে বন্ধুত্ব গড়ে তোলা হয়তো কঠিন হয় কিন্তু বন্ধুত্ব সৃষ্টির অভ্যাসে মানুষের সুযোগ বাড়তে থাকে।

৩৭. সহয়তা চানঃ সফল মানুষের বড় গুনের মধ্যে একটি হলো সহায়তা চাওয়া।

৩৮. ধীর গতিতে কাজের অভ্যাস ত্যাগ করুনঃ কোনো কাজ নিখুঁত ভাবে করার চেষ্টা করুন।

৩৯. কর্মস্থলে বন্ধুত্ব গড়ে তুলুনঃ কর্মস্থলে বন্ধুত্ব সৃষ্টি ভালো কিছু বয়ে আনে।

৪০. সঞ্চয় করুনঃ যখন থেকে উপার্জন করা শুরু করবেন তখন থেকে কিছু না কিছু সঞ্চয় করে রাখুন। [23890]
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url