কিডনিতে পানি জমলে কি করবেন - কিডনিতে পানি জমলে কি করতে হবে

কিডনিতে পানি জমলে কি করবেন? অবশ্যই আপনাকে এ বিষয়ে জানতে হবে। যদি কখনো আপনার কিডনিতে পানি জমে যায় তখন কিডনিতে পানি জমলে কি করবেন? এই বিষয় সম্পর্কে জানা থাকলে আপনি খুব সহজেই এখান থেকে মুক্তি পেতে পারবেন। আজকের এই আর্টিকেলে কিডনিতে পানি জমলে কি করবেন? এ বিষয়ে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।

আপনি যদি জানতে চান কিডনিতে পানি জমলে কি করবেন? তাহলে আপনাকে সম্পূর্ণ আর্টিকেল জুড়ে আমাদের সঙ্গে থাকতে হবে। তাহলে চলুন দেরি না করে কিডনিতে পানি জমলে কি করবেন? বিষয়টি সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

পেজ সূচিপত্রঃ কিডনিতে পানি জমলে কি করবেন - কিডনিতে পানি জমলে কি করতে হবে

যে কারণে কিডনিতে পানি জমে

আমরা সকলেই জানি যে কিডনি আমাদের শরীরের খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ। যদি কিডনি তার কর্ম ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে তাহলে এটি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ক্ষতিকর। সাধারণত কিডনি যদি তার কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় অথবা নষ্ট হয়ে যায় তাহলে আমাদের শরীরে বিভিন্ন রকমের লক্ষণ দেখা যায়। এছাড়া কিডনি নষ্ট হয়ে যাওয়ার অথবা কিডনিতে পানি জমে যাওয়ার বেশ কিছু কারণ রয়েছে। যে কারণে কিডনিতে পানি জমে অবশ্যই সচেতন থাকার জন্য সে কারণ গুলো জানা উচিত।

আরো পড়ুনঃ টিউমার ভালো করার ৯ টি উপায়

কিডনি রোগের বেশিরভাগ কারণ জানা যায় না। সাধারণত যতটুকু জানা যায় তার মধ্যে সারা দুনিয়াতে কিডনি রোগের সর্বপ্রথম এবং প্রধান কারণ হলো ডায়াবেটিস। যে রোগীর ডায়াবেটিস রয়েছে সাধারণত তার কিডনির সমস্যা হওয়াটা স্বাভাবিক।

এরপরে উচ্চ রক্তচাপ হলো কিডনির সমস্যার আরো একটি প্রধান কারণ। এ ছাড়া কিডনি নষ্ট হয়ে কিডনিতে পানি জমে যাওয়ার অন্যতম লক্ষণ এটি। এছাড়া নেফ্রাটাইসিস এর কারণে ও কিডনিতে পানি জমে যেতে পারে অথবা কিডনি নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

এছাড়া দীর্ঘদিন ধরে ভুল ওষুধ সেবন করার ফলে ও কিডনিতে পানি জমে যেতে পারে। তাই অবশ্যই ওষুধ খাওয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে আমাদেরকে ওষুধ খাওয়া উচিত। কারণ বিভিন্ন সময় ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া গুলোর কারণে কিডনিতে পানি জমে যায় নষ্ট হয়ে।

এ ছাড়া কিডনির মাধ্যমে ফিল্টার করা তরলের পরিমাণ কমে যাওয়ার কারণে কিডনিতে পানি জমে যেতে পারে। সাধারণত কিডনি রোগ এবং কিডনিতে পাথর উভয়ই শরীরের তরল ফিল্টার করার ক্ষমতা কে হস্তক্ষেপ করতে পারে। যার ফলে কিডনিতে পানি জমে যায়।

কিডনিতে পানি জমলে কি করবেন - কিডনিতে পানি জমলে কি করতে হবে জেনে নিন

কিডনিতে যদি পানি জমে তাহলে এটি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর। কিডনিতে অতিরিক্ত পানি জমে যাওয়ার কারণে অনেক সময় আমাদের শরীর অতিরিক্ত ফুলে যেতে পারে তাই কিডনিতে পানি জমলে কি করতে হবে? এ বিষয়ে সম্পর্কে অবশ্যই একজন কিডনি রোগীর ধারণা রাখতে হবে। যেহেতু কিডনি আমাদের শরীরের খুবই গুরুত্বপূর্ণ অংশ তাই কিডনিতে পানি জমলে কি করবেন? করণীয়গুলো অবশ্যই জেনে নিন।

যেকোনো ব্যক্তির উচিত ৪০ বছরের পরে একবার হলেও কিডনির পরীক্ষা করা। কোন ব্যক্তি যদি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয় তাহলে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ১৫ থেকে ২০ বছর পর কিডনি রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। কারো কারো ক্ষেত্রে খুব অল্প বছরের মধ্যেই কিডনি রোগ হয়ে যায়। যদি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে তাহলে শতকরা ৩০ থেকে ৪০ ভাগ মানুষ কিডনি ফেইলিউর হয়।

১। কিডনির সমস্যা হলে আমাদেরকে অবশ্যই ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ রাখতে হবে। কারণ কিডনির সমস্যা হওয়ার অন্যতম একটি কারণ হলো ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপ।

২। কিডনিতে পানি জমলে নিয়মিত পরীক্ষা করতে হবে এবং কিডনি কি অবস্থায় রয়েছে এ বিষয়ে সম্পর্কে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হবে।

৩। কিডনিতে পানি জমলে অথবা কোন ধরনের সমস্যা হলে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কখনো কোন ধরনের ওষুধ সেবন করা যাবে না।

৪। কিডনিতে পানি জমে যাওয়ার অন্যতম একটি কারণ হলো নেফ্রাইটিস। যদি এই সমস্যা থাকে তাহলে অবশ্যই দ্রুত এর চিকিৎসা ব্যবস্থা করতে হবে।

৫। কিডনিতে পানি জমে যাওয়ার লক্ষণগুলো প্রকাশ পাওয়ার সাথে সাথেই হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা ব্যবস্থা শুরু করে দিতে হবে।

৬। কিডনিতে পানি জমে যাওয়ার কারণে প্রসাবের ইনফেকশন যখন রক্ত ছড়ায় তখন এটি কিডনিকে খারাপ করে দেয় এজন্য অবশ্যই আমাদেরকে ইনফেকশন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।

প্রতিদিন কিডনি রোগীদের কতটুকু পানি পান করা উচিত

কিডনি সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে হলে আমাদেরকে অবশ্যই পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে। আমাদের শরীরের ৭০ শতাংশ পানি। এই পানিকে পরিশুদ্ধ করে রক্তের প্রবাহ অক্সিজেনের মাত্রা ঠিক রাখতে কাজ করে যাই কিডনি। একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির তিন লিটার পানি পান করা স্বাভাবিক হলেও কিডনির সমস্যা হলে এর পরিমাণ বাড়াতে হবে।

যদি কারো কিডনিতে সমস্যা হয় তাহলে প্রতিদিন কিডনি রোগীদের কতটুকু পানি পান করা উচিত? এ সম্পর্কে ধারণা নিয়ে আমাদের অবশ্যই পানি পান করার পরিমাপ আরো বাড়াতে হবে। কিডনিতে সমস্যা হলে আমাদের কার্যকারিতায় অনেক সমস্যা দেখা যায়। কিডনির মূল স্থম্ভ হল নেফ্রন।

সাধারণত এই নেফ্রন ক্ষতিগ্রস্ত হলেই কিডনির সমস্যাগুলো প্রকাশ পায়। কিডনির সমস্যা গুলোর মধ্যে অন্যতম হলো কিডনিতে পানি জমে যাওয়া। সঠিক সময়ে যদি এটি নির্ণয় না করে এবং ডায়ালাইসিস না করা হয় তাহলে কিডনি প্রতিস্থাপন করা ছাড়া আর কোন উপায় থাকে না।

আরো পড়ুনঃ প্রেসার লো হলে করণীয় ১৫ টি কাজ - প্রেসার লো এর ১৬ লক্ষণ

কিডনি রোগীদের কিডনি ঠিকমত কাজ না করাই শরীরের বর্জ্য প্রসাবের মাধ্যমে বের হতে পারে না। যার কারণে শরীরের বিভিন্ন অংশে পানি জমে থাকে। সাধারণত এই কারণে আমাদের হাত এবং পা ফুলে যায়। এছাড়া কিডনি খারাপ থাকা অবস্থায় বেশি বেশি পান করলে ক্ষতিগ্রস্ত কিডনিকে আরো বেশি কাজ করতে হয়।

যার ফলে কিডনির অবস্থা আরো বেশি খারাপের দিকে চলে যায়। এ অবস্থায় এই রোগী আক্রান্ত মানুষকে পরিণত পানি পান করতে হবে। বিশেষজ্ঞরা বলে থাকেন একজন সুস্থ মানুষ যিনি বাড়িতে থাকেন বেশি পরিশ্রম করেন না তিনি দিনের দুই থেকে আড়াই লিটার পানি পান করলে হয় তবে কিডনি সমস্যা হলে এটি করলে চলবে না এক্ষেত্রে অবশ্যই কম পানি করতে হবে।

ক্রনিক কিডনি ডিজিজের স্টেজ এক থেকে চার পর্যন্ত হলে দিনে এক থেকে দেড় লিটার পানি পান করতেও পারেন। তবে ইস্টেজ যদি চার পেরিয়ে যায় তাহলে দিনে ১ লিটারের কোম্পানি পান করতে হবে। পানি পান করার এই বিষয়গুলো অবশ্যই একজন কিডনি রোগীকে ভালোভাবে জানতে হবে। আশা করি প্রতিদিন কিডনি রোগীদের কতটুকু পানি পান করা উচিত? তা জানতে পেরেছেন।

কিডনিতে পানি জমলে কি হয়

কিডনিতে পানি জমলে কি হয়? এ বিষয়টি জানার পরে আমাদেরকে কিডনিতে পানি জমলে কি করবেন? করণীয়গুলো সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে হবে। কারণ আমরা সকলেই জানি যে আমাদের শরীরে খুবই গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হলো কিডনি। যদি কিডনি নষ্ট হয়ে যায় তাহলে এতে পানি জমে যায় এবং কিডনিতে পানি জমলে কি হয়? কমবেশি আমরা সকলেই জানি।

  • শরীর ফুলে যাওয়া
  • গরমে ও ঠান্ডা লাগা
  • উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিস
  • বমি বমি ভাব
  • মনোযোগ কমে যাওয়া

শরীর ফুলে যাওয়াঃ কিডনিতে পানি জমলে সর্বপ্রথমে আমাদের শরীর ফুলে যায়। কিডনিতে পানি জমে যাওয়ার আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রধান লক্ষণ হল শরীর ফুলে যাওয়া। কিডনি শরীর থেকে বর্জ্য এবং বাড়তি পানি বের করে দেয়। কিডনিতে কোন ধরনের সমস্যা হলে এ পানিগুলো বের হতে পারে না যার ফলে শরীর অনেকটা ফুলে যায়।

গরমেও ঠান্ডা লাগাঃ যেহেতু শরীরে প্রচুর পরিমাণে পানি জমে থাকে তাই গরমের সময়ও কিডনিতে পানি জমে থাকার কারণে ঠান্ডা লাগে। কিডনিতে কোন ধরনের সমস্যা হলে অথবা পানি জমলে প্রচন্ড গরম আবহাওয়াতেও শীত অনুভূত হয়। এ ছাড়া কিডনিতে কোন ধরনের সমস্যা হলে নিয়মিত জ্বর আসতে পারে।

উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিসঃ কিডনি নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারণে কিডনিতে পানি জমে যায় কারণ কিডনি তার কার্যক্ষমতা হারিয়ে ফেলে এবং পানিগুলোকে বের করতে পারে না। ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপ এ রোগের জন্য অন্যতম কারণ। এ ছাড়া কিডনির সমস্যা হলে এই রোগ গুলোর প্রদুর্ভাব আরো বেড়ে যায়।

বমি বমি ভাবঃ শরীরের রক্তে বর্জনীয় পদার্থ বেড়ে যাওয়ায় এবং কিডনিতে পানি জমে যাওয়ার কারণে অনেক সময় বমি বমি ভাব এবং মাঝেমধ্যে বমি পর্যন্ত হতে পারে। সাধারণত এটি কিডনিতে পানি জমে যাওয়ার অন্যতম একটি লক্ষণ।

মনোযোগ কমে যাওয়াঃ শরীরে লোহিত রক্তকণিকা কমে যাওয়ার কারণে মস্তিষ্কে অক্সিজেন পরিবহন কমে যায়। যার ফলে কাজে মনোযোগ দিতে অসুবিধা হয়। সাধারণত কিডনিতে পানি জমার অন্যতম একটি লক্ষণ হলো এটি।

কিডনিতে পানি জমলে কি চিকিৎসা দেওয়া হয়

যাদের কিডনিতে সমস্যা হয় সাধারণত তারা কিডনিতে পানি জমলে কি চিকিৎসা দেওয়া হয়? এ বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে চাই। যেহেতু কিডনি আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং আমাদের শরীরের অত্যন্ত কার্য করে একটি অঙ্গ তাই কিডনিতে পানি জমলে কি করবেন? এবং কিডনিতে পানি জমলে কি চিকিৎসা দেওয়া হয়? এ বিষয়গুলো অবশ্যই জানা গুরুত্বপূর্ণ।

কিডনিতে পানি জমে যাওয়ার চিকিৎসা নির্ভর করবে অন্তর্নিহিত কারণের ওপর। কিডনিতে পানি জমার কারণটি ডিহাইড্রেশন হয় তবে প্রধান চিকিত্সা হল তরল গ্রহণ বাড়ানো। কারণ কিডনি রোগ বা কিডনি পাথর হলে, চিকিত্সা অন্তর্নিহিত অবস্থা পরিচালনার উপর নির্ভর করে।

এছাড়া কিডনি রোগের অথবা কিডনিতে পানি জমার কারণটি নির্দিষ্ট ওষুধ হয়, তবে ডাক্তার একটি ভিন্ন ওষুধে স্যুইচ করতে পারেন যা শরীরের তরল ফিল্টার করার ক্ষমতাতে হস্তক্ষেপ করে না। কিছু ক্ষেত্রে, ডাক্তার মূত্রবর্ধকও দিতে পারেন, যা শরীরকে অতিরিক্ত তরল নির্গত করতে সাহায্য করে।

আরো পড়ুনঃ ব্লাড ক্যান্সার হলে কি হয় - ১০ টি ব্লাড ক্যান্সার থেকে মুক্তির উপায়

প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যাওয়া, প্রস্রাবের রং পরিবর্তন হলে কিডনি রোগ কি না ভাবতে হবে। আবার শ্বাসকষ্ট, বুক ধড়ফড় হার্ট বা ফুসফুসের সমস্যাকে নির্দেশনা করে। জ্বর, খাদ্যে অরুচি, বমি ভাব, বমি বা মলের সঙ্গে রক্তপাত ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দিলে যকৃৎ বা অন্ত্রের কোনো জটিল রোগ হয়েছে কি না খুঁজতে হবে।

কিডনিতে পানি জমলে কি করবেন - কিডনিতে পানি জমলে কি করতে হবেঃ শেষ কথা

যে কারণে কিডনিতে পানি জমে, কিডনিতে পানি জমলে কি করবেন? কিডনিতে পানি জমলে কি করতে হবে? প্রতিদিন কিডনি রোগীদের কতটুকু পানি পান করা উচিত? কিডনিতে পানি জমলে কি হয়?কিডনিতে পানি জমলে কি চিকিৎসা দেওয়া হয়? এ বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। প্রিয় বন্ধুরা আশা করি আপনারা কিডনির সমস্যা এবং এখান থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।

এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এরকম গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল আরো করতে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করুন। কারণ আমাদের ওয়েবসাইটের নিয়মিত এ ধরনের আর্টিকেল প্রকাশ করা হয়।১৬৮৩০


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url